বিড়াল আচর দিলে করণীয়

বিড়াল আচর দিলে করণীয়

বিড়াল আচর দিলে করণীয়

বিড়াল একটি জনপ্রিয় পোষা প্রাণী। তবে মাঝে মাঝে বিড়াল আচমকা আচর দিয়ে দিতে পারে। এটি পোষা বিড়ালের ক্ষেত্রে মজার মনে হলেও, এর মাধ্যমে কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। বিশেষত, রাস্তার বিড়াল আচর দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এখানে বিড়াল আচর দিলে কী করতে হবে তা ধাপে ধাপে তুলে ধরা হলো।

১. ক্ষত স্থানে দ্রুত পরিষ্কার করুন

বিড়াল আচর দিলে প্রথমেই ক্ষত স্থানে দ্রুত কাজ শুরু করতে হবে।

  • হালকা কুসুম গরম পানি এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান দিয়ে ক্ষত স্থানের চারপাশ ধুয়ে নিন।
  • পরিষ্কারের সময় হাত দিয়ে বেশি ঘষাঘষি করবেন না, কারণ এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

২. অ্যান্টিসেপ্টিক লাগান

ক্ষত স্থান পরিষ্কার করার পর সেখানে অ্যান্টিসেপ্টিক বা জীবাণুনাশক ক্রিম লাগান। এটি জীবাণু সংক্রমণ থেকে রক্ষা করবে।

৩. রক্তপাত হলে তা বন্ধ করুন

  • যদি আচরের কারণে রক্তপাত হয়, তাহলে পরিষ্কার গজ বা কাপড় দিয়ে হালকা চাপ দিয়ে রক্তপাত বন্ধ করার চেষ্টা করুন।
  • খুব বেশি রক্তপাত হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

৪. বিড়ালের টিকা দেওয়া আছে কি না নিশ্চিত করুন

যদি পোষা বিড়াল আচর দেয়, তাহলে নিশ্চিত করুন বিড়ালটি নিয়মিত টিকা পেয়েছে কিনা।

  • পোষা বিড়ালের জন্য নিয়মিত রেবিস (Rabies) এবং টিটেনাস টিকা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • রাস্তার বিড়াল হলে অবশ্যই সতর্ক থাকুন, কারণ তাদের মাধ্যমে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে।

৫. চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

বিড়াল আচরের কারণে কোনো ধরণের লালচে দাগ, ব্যথা, ফুলে যাওয়া, বা পুঁজ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

  • প্রয়োজনে রেবিস টিকা বা টিটেনাস ইনজেকশন নেওয়া হতে পারে।
  • চিকিৎসক সংক্রমণ ঠেকাতে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধও দিতে পারেন।

৬. লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করুন

আচরের পর নিচের লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান:

  • তীব্র ব্যথা বা ফুলে যাওয়া।
  • তাপমাত্রা বৃদ্ধি বা জ্বর।
  • ক্ষত স্থানে কালচে দাগ পড়া।

৭. ভবিষ্যতে সাবধানতা অবলম্বন করুন

  • বিড়ালের সাথে খেলার সময় বা আচরণের সময় সাবধান থাকুন।
  • বিড়ালের নখ কাটুন এবং নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন।
  • যদি রাস্তার বিড়াল কাছাকাছি আসে, তাদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন।

বিড়াল আচর দিলে সম্ভাব্য রোগগুলো

বিড়াল আচরের মাধ্যমে কিছু রোগ ছড়াতে পারে, যেমন:

  1. রেবিস: প্রাণঘাতী ভাইরাস যা বিড়ালের আচরের মাধ্যমে ছড়াতে পারে।
  2. ক্যাট স্ক্র্যাচ ডিজিজ (Cat Scratch Disease): ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট একটি অসুখ।
  3. টিটেনাস: অপরিষ্কার নখের মাধ্যমে সৃষ্ট সংক্রমণ।

উপসংহার

বিড়াল আচর দিলে দুশ্চিন্তা না করে দ্রুত পদক্ষেপ নিন। পরিচ্ছন্নতা ও প্রাথমিক চিকিৎসা জীবাণু সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে। যদি ক্ষত গভীর হয় বা কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা যায়, দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back To Top